ঈগলের জ্ঞাতি আলী হোসেন তোমার সেই ছোট্টবেলার কথা মনে আছে যা বলেছিলে প্রথম দেখার দিন? বলেছিলে তোমার প্রিয় বন্ধুর কথা; যে বলেছিল, 'জানিস মোহিত তোর মধ্যেই আমি আমাকে দেখতে পাই, তুই পাস?' তুমি বলেছিলে, পাই। আরও অনেক কিছু দেখি সেখানে। সবুজ মাঠ, হেলে পড়া বট, মজে যাওয়া নদীর দীর্ঘশ্বাস। দেখি একমুখ দাড়ি নিয়ে ন্যুজ বটগাছ দাঁড়িয়ে আছে আমাকে বুকে নিয়ে। বুক ভরে শ্বাস নিতে নিতে দেখি আমার মায়ের নিশ্চিন্ত শ্বাসের মধ্যে ছাদহীন কুঠিরে, যে দাঁড়িয়ে, সে তো তুই-ই! সেদিন আরও অনেক কিছু বলেছিলে তুমি। অনেক কঠিন লেগেছিল সেসব। আজ যখন বুঝতে পারি তোমার সেই সহজ কথাগুলো, তখন তুমি ঝাপসা হয়ে গেলে। অবুঝ আর কঠিন হয়ে গেলে, ঘোর সন্ধ্যায়। আবছা আলোয় মাঝে মাঝে দেখতে পাই ঈগলের লাল চোখ, তোমার কপালের দু'পাশে! গেরুয়ার বদলে যাওয়া রঙের আভায় কী করে সাহসে বদলে গেল তোমার ভয়? কী করে বললে, 'আমার ওসব নেই; আমিও তো ঈগলেরই জ্ঞাতি, আমি তাদেরই লোক !' --------------***----------- লেখাটি নতুন গতির ঈদসংখ্যায় প্রকাশের জন্য সম্পাদক মহাশয় নিয়েছিলেন। জানা হয়ে ওঠেনি কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছে কিনা।
শিকারি নয়, পাখিরাই বুঝি সন্ত্রাসী হয় ! আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : ডানা মেলতে চেয়েছি, খোলা আকাশকে ভালোবেসে তোমাকে বন্দী করিনি সেদিন, এই অধিকারের অছিলায় তবু, আজ আমি এক উন্মুক্ত কারাগারে বন্দীবাসী আর, সে কারাগারের রাজরক্ষী, আজ আমি নই, তুমি! তুমি শ্বাস নেবে ভেবে, আলগা করেছিলাম বুকের পাঁজর পরিযায়ী জেনে, তোমাকে জায়গা দিয়েছিলাম যে পানসিতে তাকিয়ে দ্যাখো, সে এখন বারুদ বাতাসে ডুবন্ত প্রায়। আর সেই ছোট্ট পানসির নিয়ন্ত্রক, আজ আমি নই, তুমি! আজীবন বাঁচবো ভেবেছি জলপাইয়ের ছায়াকাশে কাটাছেঁড়া নয়, কবিতার ভাঁজে তোমাকে পাবো বলে নিভৃতে সেই আমি, আজ কামানের শব্দে পাখা ঝাঁপটাই... ঘুমাইও। যদিও সে শব্দ-মালিক, বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! চোখের জলকে আগলে রেখেছি, আট দশক হয়ে গেল বিরহের বেদনা ভাগ করে নিতে, গোপনে তোমারই অনুসঙ্গে। আজ সে শুকিয়ে গেছে, চাতকের কন্ঠের মতো। এ পিপাসার সৃষ্টিকর্তা কে! বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! কী দোষ...