শিকারি নয়, পাখিরাই বুঝি সন্ত্রাসী হয়!
আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা :
ডানা মেলতে চেয়েছি, খোলা আকাশকে ভালোবেসেতোমাকে বন্দী করিনি সেদিন, এই অধিকারের অছিলায়
তবু, আজ আমি এক উন্মুক্ত কারাগারে বন্দীবাসী
আর, সে কারাগারের রাজরক্ষী, আজ
আমি নই, তুমি!
তুমি শ্বাস নেবে ভেবে, আলগা করেছিলাম বুকের পাঁজর
পরিযায়ী জেনে, তোমাকে জায়গা দিয়েছিলাম যে পানসিতে
তাকিয়ে দ্যাখো, সে এখন বারুদ বাতাসে ডুবন্ত প্রায়।
আর সেই ছোট্ট পানসির নিয়ন্ত্রক, আজ
আমি নই, তুমি!
আজীবন বাঁচবো ভেবেছি জলপাইয়ের ছায়াকাশে
কাটাছেঁড়া নয়, কবিতার ভাঁজে তোমাকে পাবো বলে নিভৃতে
সেই আমি, আজ কামানের শব্দে পাখা ঝাঁপটাই... ঘুমাইও।
যদিও সে শব্দ-মালিক, বিশ্ব জানে
আমি নই, তুমিই!
চোখের জলকে আগলে রেখেছি, আট দশক হয়ে গেল
বিরহের বেদনা ভাগ করে নিতে, গোপনে তোমারই অনুসঙ্গে।
আজ সে শুকিয়ে গেছে, চাতকের কন্ঠের মতো।
এ পিপাসার সৃষ্টিকর্তা কে! বিশ্ব জানে
আমি নই, তুমিই!
কী দোষ ছিল পাখিটার! কেন নিজভূমে হল পরবাসী?
সে তো মধ্য-সাগরের স্রোতকে কব্জা করেনি, চায়ওনি কখনো
ভেঙে দেয়নি কারও স্বপ্ন, ডিঙা ভাসানোর অধিকার।
তবে, কোন্ অধিকারে তার জীবনের
দখলদার হ’লে তুমি!
কোন্ অধিকার রক্ষায় ছেঁড়ো কুঁড়ি, ভাঙো তার ডানা,
কেন খোলা আকাশের রঙ ঝলসাও আজ ভীষণ গোলায়
শৈশবকে ঠেলে দাও অকাল বার্ধক্যের দরজায়?
আমি জানি, এ অকাল বার্ধক্যের সোহাগ
মাখাচ্ছে যে, সে তুমিই!
এ প্রশ্ন তোমার কাছে হে বিশ্ব-মোড়ল, শোনো গাঙচিল
এ প্রলয়ের বিরুদ্ধে আমি; গেয়ে যাব, বাজাবো এ মরণবীণ
শুনবো না তোমার ও’ঠোঁটে, সন্ত্রাসের সেই সহজপাঠ —
শিকারি নয়, নীড়-হারা পাখি, ঠোঁকরালেই
সে সন্ত্রাসী হয়ে যায়!
-------xx-------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন