সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

আলী হোসেন : সর্বশেষ কবিতা

শিকারি নয়, পাখিরাই সন্ত্রাসী হয়!

শিকারি নয়, পাখিরাই বুঝি সন্ত্রাসী হয় ! আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : ডানা মেলতে চেয়েছি, খোলা আকাশকে ভালোবেসে তোমাকে বন্দী করিনি সেদিন, এই অধিকারের অছিলায় তবু, আজ আমি এক উন্মুক্ত কারাগারে বন্দীবাসী            আর, সে কারাগারের রাজরক্ষী, আজ আমি নই, তুমি! তুমি শ্বাস নেবে ভেবে, আলগা করেছিলাম বুকের পাঁজর পরিযায়ী জেনে, তোমাকে জায়গা দিয়েছিলাম যে পানসিতে  তাকিয়ে দ্যাখো, সে এখন বারুদ বাতাসে ডুবন্ত প্রায়।            আর সেই ছোট্ট পানসির নিয়ন্ত্রক, আজ আমি নই, তুমি! আজীবন বাঁচবো ভেবেছি জলপাইয়ের ছায়াকাশে  কাটাছেঁড়া নয়, কবিতার ভাঁজে তোমাকে পাবো বলে নিভৃতে সেই আমি, আজ কামানের শব্দে পাখা ঝাঁপটাই... ঘুমাইও।            যদিও সে শব্দ-মালিক, বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! চোখের জলকে আগলে রেখেছি, আট দশক হয়ে গেল  বিরহের বেদনা ভাগ করে নিতে, গোপনে তোমারই অনুসঙ্গে। আজ সে শুকিয়ে গেছে, চাতকের কন্ঠের মতো।             এ পিপাসার সৃষ্টিকর্তা কে! বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! কী দোষ ছিল পাখিটার! কেন নিজভূমে হল পরবাসী? সে তো মধ্য-সাগরের স্রোতকে কব্জা করেনি, চায়ওনি কখনো ভেঙে দেয়নি কারও স্বপ্ন, ডিঙা ভাসানোর অধিকার।
সাম্প্রতিক পোস্টগুলি

মাড়িয়ে যাবো একদিন

জেগে উঠবই একদিন আলী হোসেন মাড়িয়ে যাবো একদিন - আলী হোসেন  আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : ‘মাড়িয়ে যাবো একদিন’। অশরীর নও, তবু খনা গলায় হাসছো? হাসো... অপেক্ষা করছি বিনিদ্র রজনী তোমার বারুদে বুক সেকে বরণ নয়, তোমাকে স্মরণ করবো বলে; পলকহীন জেগে থাকবো, দগ্ধ-দেহ-গন্ধ প্রিয় ও মুখ ফেরাউনের চেহারায় পাল্টে দেবো একদিন। লাশের উপত্যকায় বসে শান্তি খোঁজো? খোঁজো... অপেক্ষা করছি বুকের বাম পাশে ধক্ ধক্ শব্দ করে স্যালুট নয়, তোমাকে স্মরণ করবো বলে; জেগে থাকবো সহস্র এক রজনী তোমার বামপাশের  শব্দ ও তার মানে, পাল্টে দেবো একদিন। আমার পাঁজর ভেঙে শান্তি কিনছো? কেনো... অপেক্ষা করছি, যুগান্তরের পথে এক স্বপ্ন-পাঁজর নিয়ে,  জীবন নয়, তোমার কাফন কিনবো বলে; জেগে থাকব, লাল মুখো প্রেতাত্মা রূপে খোজা শান্তির মানে, পাল্টে দেবো একদিন কীভাবে অধিকার খোঁজো, কার জন্য? খোঁজো... আমার অধিকারের বুকে কবর খোঁড়ে যে শ্বাপদ, বলে দাও দেখা হবে ‘আট দশকের অভিশাপ’ হয়ে; শ্রম আর স্বপ্নের দখলদারের পারদ-পতনের শব্দে তোমার স্বপ্ন, মাড়িয়ে যাবো একদিন। ---------xx---------

আঁধারের মেওয়া

আঁধারের মেওয়া আলী হোসেন আগুনের কি ক্ষমতা থাকে বারুদের আস্ফালন রুখে দেওয়ার? জল প্লাবনকে আটকাবে যদি, তার খিদের কী হবে? এতসব প্রশ্নের কোন মানে হয় না শুধু দেখে যাও আমরা মাথা উচু করে হাঁটছি প্লাবন ঠেলে, জগৎ সভায় ডিঙোচ্ছি এক একটা মাইল ফলক। হোক না তা বারুদ আর বর্বরতার সাঁকোয় চড়ে! বলছি, আগুনকে ভালোবাসো, হোক না তা নৃশংসতার, এই ভেবে, সে অন্ধকারের শত্রু সহ্য করো তাকে সম্ব্রমের বিনিময়ে হলেও এই ভেবে, একদিন সে ভালোবাসার দাগ রেখে যাবে, হোক না, সে দাগের নাম গুজরাট, কিম্বা মনিপুরি কোন অচিন গাঁ নগ্নতার কোন মিছিলেই তো হবে আমাদের রাজাধিরাজের নতুন অভিষেক। এটাই তো রীতি, এটাই তো রেওয়াজ আমাদের। সবুরে মেওয়া ফলে, নগ্নতার আর আঁধারের মেওয়া, সেটাই তো খেয়ে যাই আমরা তারিয়ে তারিয়ে নিশ্ছিদ্র নিরবতায়, চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যায়, ভেবে। -------xx------ 👉 ফেসবুকে পড়ুন এখানে ক্লিক করে 

স্বপ্ন ভাঙার গল্প

স্বপ্ন ভাঙ্গার গল্প - আলী হোসেন ঃ সেদিন শেষ রাতে স্বপ্ন দেখছিলাম, গভীর রাতে সূর্য্য উঠছে আমার ভাঙা কপালের ফাঁক দিয়ে ওরা বলেছিল, শেষ রাতের স্বপ্ন সত্যি হয়,                             আমাদের সঙ্গে এসো। হঠাৎ, নিশীথ সূর্যের আলোয় জেগে উঠেছিল এক চিলতে চিলেকোঠার চূড়া দেখলাম, আমার স্বপ্নগুলোই উঁকি দিচ্ছে  একমুঠো ভাত হয়ে                              তারই জরাজীর্ণ ঘুলঘুলিতে। তারপর স্বপ্ন শেষ হল...., দেখলাম, আমার ভাতের স্বপ্নগুলোই কাঠ কয়লার মত লাশ হয়ে পড়ে আছে                           বগটুইয়ের একচিলতে মেঝেতে। রাজ-শকুনেরা বনবন করে উড়ছে, ঠোকরাচ্ছে, আর কাড়াকাড়ি করছে                           ভাগাড়ের দখলদারিতে। আর একদিন দেখলাম, রাতের আঁধার ভেঙে এক দোয়াত কালি উঠছে পা বেয়ে,  তারপর আমার মাথার অলিতে গলিতে আঁচড় কাটছে সাদা খাতার খিদে মেটাতে। সাদা খাতার খিদে বাড়ছে দেখে,                                  বুকে বল পেলাম। ভাবলাম, জন্ম-ফলের অঙ্কুরের  মাথা গুঁজবার অবলম্বন হবে এবার প্রত্যাশার ছেঁড়া তুলোর ভরা                       বালিশটাই তাই পাল্টে দিলাম। এবার ঘুম ভাঙতেই দেখি, শরীরের অলিগলিতে আঁ

আরশি নগরের পড়শী

আলী হোসেনের কবিতা : আরশি নগরের পড়শী  যেদিন কুমিল্লা হল, আমি কলকাতার কানাগলিতে বসে শুনতে পাচ্ছিলাম সবুজপাতার ঝরে পড়ার কর্কশ শব্দ। বুকের ওঠাপড়ার গ্রাফ এঁকে দিচ্ছিল বিবেকের ক্যানভাসে শকুনের আস্ফালন। আমি চিল-চিৎকারে কেঁদে উঠেছিলাম,                     আমার পড়শীর ধমনীর ভেতরে বসেই। কেন জানেন? কেননা, ওরাও তো আমার মতই মানুষ ছিল। যেদিন রংপুর হল, ইনিয়েবিনিয়ে উন্মাদের মুণ্ডুছেদের ছবি এঁকেছিলাম  একমুঠো তুলির বিবেকি আঁচড়ে। ওয়েবের অনাচে-কানাচে পৌঁছে দিয়েছি সেই ছবি  টকশোর টেবিলে ঝড় তুলেছি আমার                      পড়শীর  ধমনীর প্রবাহে বসে। কেন বলুন তো? কেননা, ওরাও আমার মত মানুষ ছিল। সেদিন কুমিল্লা হল, আমি পথে পথে হেঁটেছি লাল-সবুজ-গেরুয়া নিশান হাতে একলহমায় রামধনুতে মুড়িয়ে দিয়েছি দিগন্ত মানবতার মায়ের মৃত্যুর  শোকগাথা শুনিয়েছি, বিশ্ব-বিবেককে ঘুম থেকে টেনে তুলেছি আমার                      সেই  পড়শীরই ধমনীর ধারায় ভেসে। কেন জানেন তো? আসলে, ওরাও তো আমার মতই মানুষ ছিল। ........xx.......

বরাকের মিনি ও রহমত

সেদিন সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। আকাশের তারা খসার মত আমার আত্মা খসে খসে পড়ছিল রুক্ষ আর শুষ্ক রহমতের বুকে সারা দেশের ড্রইং রুম কেঁপে উঠেছিল বর্বরতার যন্ত্রনায় চোদ্দ থেকে চল্লিশ ইঞ্চির বোকা বাক্সে চোখ রেখে আমার মত সারাদেশ শোকে মাতন করেছে শ্বাস-কাটা মুরগির মত। আমিও দেখেছি সেই কালো সময়ের দুর্গন্ধ মাখা জীবন্ত লাশের অসহায় পিলখানার গোঙানি, অনুভব করেছি হৃদকম্প কিন্তু আজ স্নায়ুতে কম্পন নেই,বিবেকের পিতা শুড়িখানায় শুয়ে আছে নিশ্চিন্তে। দরং এর দরজায় কেঁপে কেঁপে উঠছে ছোট ছোট জোনাকির মত রহমতের মিনিরা চোখ বুঁজে আমার আত্মা নাচছে, তান্ডব করছে বরাকের বাঁকে রহমতের বুকে। তবু ড্রইং রুম শ্মশানের নিস্তব্ধতায় ঝিমোচ্ছে... কেন? ভেবে দেখলাম আমার বিবেক বন্ধক পড়ে গেছে কর্পোরেটের আঁধার কুলুঙ্গিতে,যেখানে আলোর প্রবেশ নিষেধ।

আধখোলা জানালায়

আলী হোসেনের প্রেমের কবিতা : আধখোলা জানালায় যখন মোমের আলোয় ভিজে দাঁড়াতে আধখোলা জানালায়, তখন ছায়া পড়তো বুকের ভেতর একদলা ভালোলাগার। জেগে উঠতো আমার ভেতরের মজনুটা, চাঁদের দুরত্ব ভেঙে পৌছতাম তোমার স্বপ্নের সীমানায়, একবার ছুঁয়ে যেতে আধখোলা জানালায়। আকাশের ছাঁয়া খোঁজার নেশা নিয়ে যখন ক্লান্ত রাতের চোখবুঁজে যেত, তখনও আমি টেনে রাখতাম চোখের পাতা তোমাকে দেখব বলে; গভীর রাতের আধখোলা জানালায়। রামধনুর রঙ-মাখা চোখে ভোরের বাতাস মেখে ঝাঁটা হাতে দাঁড়াতে যখন উঠোনের কোনে, তোমার কপালের টিপে ভেসে উঠতো সকালের সূর্য, পটে আকাঁ ছবির মত। আমি দাঁতোনের ডাল মুখে কলপাড়ে দাঁড়াতাম নরম সূর্যের উষ্ণতা নেব বলে; তুমি আধখোলা জানালায় ভেবে। তোমার চিকন ঠোঁটের একদানা তিল রাতের গভীরতায় কালপুরুষের বুক ছুঁয়ে যেত আমার চোখ আঁটকাত আকাশের কালোয়। আমি কালপুরুষের মত দাঁড়াতাম সন্ধ্যা-রাতের আধখোলা জানালায়। যখন বুকের ভিতর শীতের কাঁপুনিতে তোমার উষ্ণতা হারানোর ভয়ে  নুরমহলে নৈবেদ্য সাজিয়েছে প্রকৃতি তোমার দুধে-আলতা শরীরের দূতীতে আমি পুরোহিত হতে দাঁড়িয়েছি মণ্ডপের আধখোলা জানালায়। তুমি তখন নবোদ্ভিন্ন স্তনের নিটোল টানে নতুন কদমফুল। আর আমি আনকোরা অরণি

📂 আলী হোসেনের জনপ্রিয় কবিতাগুলি পড়ুন

আঁধারের মেওয়া

আঁধারের মেওয়া আলী হোসেন আগুনের কি ক্ষমতা থাকে বারুদের আস্ফালন রুখে দেওয়ার? জল প্লাবনকে আটকাবে যদি, তার খিদের কী হবে? এতসব প্রশ্নের কোন মানে হয় না শুধু দেখে যাও আমরা মাথা উচু করে হাঁটছি প্লাবন ঠেলে, জগৎ সভায় ডিঙোচ্ছি এক একটা মাইল ফলক। হোক না তা বারুদ আর বর্বরতার সাঁকোয় চড়ে! বলছি, আগুনকে ভালোবাসো, হোক না তা নৃশংসতার, এই ভেবে, সে অন্ধকারের শত্রু সহ্য করো তাকে সম্ব্রমের বিনিময়ে হলেও এই ভেবে, একদিন সে ভালোবাসার দাগ রেখে যাবে, হোক না, সে দাগের নাম গুজরাট, কিম্বা মনিপুরি কোন অচিন গাঁ নগ্নতার কোন মিছিলেই তো হবে আমাদের রাজাধিরাজের নতুন অভিষেক। এটাই তো রীতি, এটাই তো রেওয়াজ আমাদের। সবুরে মেওয়া ফলে, নগ্নতার আর আঁধারের মেওয়া, সেটাই তো খেয়ে যাই আমরা তারিয়ে তারিয়ে নিশ্ছিদ্র নিরবতায়, চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যায়, ভেবে। -------xx------ 👉 ফেসবুকে পড়ুন এখানে ক্লিক করে 

শিকারি নয়, পাখিরাই সন্ত্রাসী হয়!

শিকারি নয়, পাখিরাই বুঝি সন্ত্রাসী হয় ! আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : ডানা মেলতে চেয়েছি, খোলা আকাশকে ভালোবেসে তোমাকে বন্দী করিনি সেদিন, এই অধিকারের অছিলায় তবু, আজ আমি এক উন্মুক্ত কারাগারে বন্দীবাসী            আর, সে কারাগারের রাজরক্ষী, আজ আমি নই, তুমি! তুমি শ্বাস নেবে ভেবে, আলগা করেছিলাম বুকের পাঁজর পরিযায়ী জেনে, তোমাকে জায়গা দিয়েছিলাম যে পানসিতে  তাকিয়ে দ্যাখো, সে এখন বারুদ বাতাসে ডুবন্ত প্রায়।            আর সেই ছোট্ট পানসির নিয়ন্ত্রক, আজ আমি নই, তুমি! আজীবন বাঁচবো ভেবেছি জলপাইয়ের ছায়াকাশে  কাটাছেঁড়া নয়, কবিতার ভাঁজে তোমাকে পাবো বলে নিভৃতে সেই আমি, আজ কামানের শব্দে পাখা ঝাঁপটাই... ঘুমাইও।            যদিও সে শব্দ-মালিক, বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! চোখের জলকে আগলে রেখেছি, আট দশক হয়ে গেল  বিরহের বেদনা ভাগ করে নিতে, গোপনে তোমারই অনুসঙ্গে। আজ সে শুকিয়ে গেছে, চাতকের কন্ঠের মতো।             এ পিপাসার সৃষ্টিকর্তা কে! বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! কী দোষ ছিল পাখিটার! কেন নিজভূমে হল পরবাসী? সে তো মধ্য-সাগরের স্রোতকে কব্জা করেনি, চায়ওনি কখনো ভেঙে দেয়নি কারও স্বপ্ন, ডিঙা ভাসানোর অধিকার।

স্বপ্ন ভাঙার গল্প

স্বপ্ন ভাঙ্গার গল্প - আলী হোসেন ঃ সেদিন শেষ রাতে স্বপ্ন দেখছিলাম, গভীর রাতে সূর্য্য উঠছে আমার ভাঙা কপালের ফাঁক দিয়ে ওরা বলেছিল, শেষ রাতের স্বপ্ন সত্যি হয়,                             আমাদের সঙ্গে এসো। হঠাৎ, নিশীথ সূর্যের আলোয় জেগে উঠেছিল এক চিলতে চিলেকোঠার চূড়া দেখলাম, আমার স্বপ্নগুলোই উঁকি দিচ্ছে  একমুঠো ভাত হয়ে                              তারই জরাজীর্ণ ঘুলঘুলিতে। তারপর স্বপ্ন শেষ হল...., দেখলাম, আমার ভাতের স্বপ্নগুলোই কাঠ কয়লার মত লাশ হয়ে পড়ে আছে                           বগটুইয়ের একচিলতে মেঝেতে। রাজ-শকুনেরা বনবন করে উড়ছে, ঠোকরাচ্ছে, আর কাড়াকাড়ি করছে                           ভাগাড়ের দখলদারিতে। আর একদিন দেখলাম, রাতের আঁধার ভেঙে এক দোয়াত কালি উঠছে পা বেয়ে,  তারপর আমার মাথার অলিতে গলিতে আঁচড় কাটছে সাদা খাতার খিদে মেটাতে। সাদা খাতার খিদে বাড়ছে দেখে,                                  বুকে বল পেলাম। ভাবলাম, জন্ম-ফলের অঙ্কুরের  মাথা গুঁজবার অবলম্বন হবে এবার প্রত্যাশার ছেঁড়া তুলোর ভরা                       বালিশটাই তাই পাল্টে দিলাম। এবার ঘুম ভাঙতেই দেখি, শরীরের অলিগলিতে আঁ

কথা ভাঙার কথা

আলী হোসেনের প্রেমের কবিতা :  কথা ভাঙার কথা আমার বুকের ভেতর তুমি শিরা উপশিরার মত বিছিয়ে রেখেছো নিজেকে পিছনেও তুমি, ঠিক শিকড়ের মত, যেদিকে তাকাই সেদিকেই আছো তুমি অনন্ত আকাশের মত খোলা বুক নিয়ে এ আশ্বাস তোমারই দেওয়া। তুমি বলেছিলে, আমার জন্য এক সোনালী সকাল এনে দেবে যেখানে থাকবে এক চিলতে চাঁদের মত স্বপ্নগুচ্ছ  একমুঠো নতুর আলোর ঝলকানি; আমার নিকষ-রাতের আকাশে তুমি থাকবে রাত পাহারার জোনাক হয়ে। এ আশ্বাস তোমারই দেওয়া। তুমি সেই আলোয় বানাবে স্বপ্নপুরীর জীয়নকাঠী পঙ্খীরাজে সওয়ার হবে অচিন গাঁয়ের রাজপুত্রের মত তুমি, আসবে স্বপ্নের কানাগলিতে  যেখানে ঝিমিয়ে আছে আমার অপুষ্ট স্বপ্নগুলো এ প্রতিশ্রুতি তোমারই দেওয়া। আমি বিশ্বাস করেছিলাম, আলোর স্বপ্নে স্নাত হব আমি, হবে ভেতরের অন্ধকার। রাতের জোনাক হয়ে আসবে ঘরের কোণে বিজলি বাতির মতো। অন্ধকারের শৃঙ্খল ভেঙে  আমাকে মুক্তি দেবে ভরা জ্যোৎস্নার চাঁদের মত কোন এক নতুন ডেরায় এ শপথ তোমারই নেওয়া। আমি কথা রেখেছি। হাত রেখেছি তোমার হাতে.... সেও কয়েক দশক হয়ে গেল  কিন্তু এখনও বুঝিনি  বুকের কাছে জায়গা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিগুলো কীভাবে বদলে গেল শৃঙ্খলে! কথা ভাঙার কথায় কীভাবে হ

পিঁপড়ের লাশ ও জ্যামিতির খাতা

আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : পিঁপড়ের লাশ ও জ্যামিতির খাতা সারি সারি পিঁপড়ের লাশ অথবা মুমূর্ষু দেহ পড়ে আছে উত্তাপের স্তূপে তুমি দেখতে পাও না পিছনটা                     হাতির মত  বিশাল তোমার দেহ, মাহুতের চোখই তোমার চোখ, তোমার পথ আর গন্তব্যও প্রভুর নির্দেশ এলে শুড় দিয়ে ছুড়ে দাও তুমি মাথার ওপারের শুষ্ক মরুভূমির বুকে একপশলা বৈশাখী বৃষ্টি, নাম দাও                    শরতের  শিশির তাতে পিঁপড়েরা ভেজে না, পোড়েও না  কেবলই আধপোড়া হয় শীর্ন দেহ তোমার চোখে চুখোশ আটা, তাই কিছুই দেখো না জেগে থাকো নিরোর স্বপ্ন নিয়ে ঘেন্নার পিল খাওয়াও আর আকন্ঠ গেলাও                      উন্নয়নের সিরাপ সর্বরোগ-হারী বিশল্যাকরনীর ভরসায় ডেকে আনো চেতনার অকাল মৃত্যু এভাবে এগোবে তুমি, এগোবে তোমার রথ এটাই সরল অংক তোমার জ্যামিতির খাতায়? ভুলে যেওনা                       এই পিঁপড়েরাই  বয়ে বেড়ায় তোমার ওজন, তোমার নিশ্বাস তোমার ইহকাল, হয়তো বা পরকালও ভুলে যেও না এরা জাগলেই ছিঁড়ে যাবে তুমি ও তোমার সরল অংকের                        জ্যামিতির খাতা তোমার উপেক্ষার শ্মশান যাত্রায় এরা অংশ নেবে না, নেবে না মুখাগ্নির দায়।

বরাকের মিনি ও রহমত

সেদিন সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। আকাশের তারা খসার মত আমার আত্মা খসে খসে পড়ছিল রুক্ষ আর শুষ্ক রহমতের বুকে সারা দেশের ড্রইং রুম কেঁপে উঠেছিল বর্বরতার যন্ত্রনায় চোদ্দ থেকে চল্লিশ ইঞ্চির বোকা বাক্সে চোখ রেখে আমার মত সারাদেশ শোকে মাতন করেছে শ্বাস-কাটা মুরগির মত। আমিও দেখেছি সেই কালো সময়ের দুর্গন্ধ মাখা জীবন্ত লাশের অসহায় পিলখানার গোঙানি, অনুভব করেছি হৃদকম্প কিন্তু আজ স্নায়ুতে কম্পন নেই,বিবেকের পিতা শুড়িখানায় শুয়ে আছে নিশ্চিন্তে। দরং এর দরজায় কেঁপে কেঁপে উঠছে ছোট ছোট জোনাকির মত রহমতের মিনিরা চোখ বুঁজে আমার আত্মা নাচছে, তান্ডব করছে বরাকের বাঁকে রহমতের বুকে। তবু ড্রইং রুম শ্মশানের নিস্তব্ধতায় ঝিমোচ্ছে... কেন? ভেবে দেখলাম আমার বিবেক বন্ধক পড়ে গেছে কর্পোরেটের আঁধার কুলুঙ্গিতে,যেখানে আলোর প্রবেশ নিষেধ।

মাড়িয়ে যাবো একদিন

জেগে উঠবই একদিন আলী হোসেন মাড়িয়ে যাবো একদিন - আলী হোসেন  আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : ‘মাড়িয়ে যাবো একদিন’। অশরীর নও, তবু খনা গলায় হাসছো? হাসো... অপেক্ষা করছি বিনিদ্র রজনী তোমার বারুদে বুক সেকে বরণ নয়, তোমাকে স্মরণ করবো বলে; পলকহীন জেগে থাকবো, দগ্ধ-দেহ-গন্ধ প্রিয় ও মুখ ফেরাউনের চেহারায় পাল্টে দেবো একদিন। লাশের উপত্যকায় বসে শান্তি খোঁজো? খোঁজো... অপেক্ষা করছি বুকের বাম পাশে ধক্ ধক্ শব্দ করে স্যালুট নয়, তোমাকে স্মরণ করবো বলে; জেগে থাকবো সহস্র এক রজনী তোমার বামপাশের  শব্দ ও তার মানে, পাল্টে দেবো একদিন। আমার পাঁজর ভেঙে শান্তি কিনছো? কেনো... অপেক্ষা করছি, যুগান্তরের পথে এক স্বপ্ন-পাঁজর নিয়ে,  জীবন নয়, তোমার কাফন কিনবো বলে; জেগে থাকব, লাল মুখো প্রেতাত্মা রূপে খোজা শান্তির মানে, পাল্টে দেবো একদিন কীভাবে অধিকার খোঁজো, কার জন্য? খোঁজো... আমার অধিকারের বুকে কবর খোঁড়ে যে শ্বাপদ, বলে দাও দেখা হবে ‘আট দশকের অভিশাপ’ হয়ে; শ্রম আর স্বপ্নের দখলদারের পারদ-পতনের শব্দে তোমার স্বপ্ন, মাড়িয়ে যাবো একদিন। ---------xx---------

বন্ধু তুমি নাই - আলী হোসেন

বন্ধু তুমি নাই আলী হোসেনের লেখা কবিতা ২রা অক্টোবর। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধির জন্মদিন। রাষ্ট্রদর্শন বিষয়ে ভিন্নমত থাকলেও তাঁর মানবপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তোলার যোগ্যতা আমার নেই। জন্মদিনে তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধার্ঘ --- বাড়ির পাশে যখন দেখি ভাইকে মারে ভাই কারণ হল ও ভিন্নজাত আর ভিন্ন ধর্ম তাই তখন দেখি আমার পাশে বন্ধু তুমি নাই। গ্রামের পথে যখন দেখি নেতার নেতা নাই কারণ হল ও নিন্মজাত মাথায় কিচ্ছু নাই তখন দেখি আমার হাতে তোমার হাতটি নাই। যখন দেখি ঘুমটি দুটোর মাথায় ছাউনি নাই কারণ যেজন পাড়ার দাদা তার দলে সে নাই তখন বুঝি আমার পাশে শান্তি সেনা নাই। যখন তুমি স্বপ্নে আসো দেশটা দেখে কাঁদো আমার বুকে তুফান ওঠে ভাঙে বুকের বাঁধও তখন দেখি আমার পাশে বন্ধু তুমি নাই। ----------xx-------- পাঠকের প্রতিক্রিয়া দেখুন ফেসবুকে বাড়ির পাশে যখন দেখি ভাইকে মারে ভাই কারণ হল ও ভিন্নজাত আর ভিন্ন ধর্ম তাই তখন দেখি আমার পাশে বন্ধু তুমি নাই। গ্রামের পথে যখন দেখি নেতার নেতা নাই কারণ হল ও নিন্মজাত মাথায় কিচ্ছু নাই তখন দেখি আমার হাতে তোমার হাতটি নাই। যখন দেখি ঘুমটি দুটোর মাথায় ছাউনি নাই কারণ যেজন পাড়ার দাদা তার দলে সে নাই

মুক্তির ডানায় আঠারো

আলী হোসেনের কবিতা : মুক্তির ডানায় আঠারো  দিগন্ত বিস্তৃত ভাবনার আকাশে মুক্ত তোমার ইচ্ছেরা, আঠারোর আবেগ-পাখায় ভর দিয়ে  তুমি মুক্তির ডানা ঝাপটাও প্রতি দিন, প্রতি ক্ষণ। লাল রঙা প্রভাতের হাসিমুখে ভুলে স্নেহ, মায়া আর মমতার  রশিতে বানিয়েছিলাম এক স্বপ্নময় রঙিন খাঁচা। তুমি সেই খাঁচায় বন্দি হয়ে আছো  আঠারোর প্রত্যাশা নিয়ে, যেখানে আলো আর বাতাসের চাপ চাপ উপস্থিতি। অথচ দম বন্ধ হয়ে আসছে তোমার বুক ভরে শ্বাস নিতে পারছো না, আগল কেটে ফেরার হওয়ার ইচ্ছায় তুমি পাখা ঝাপটাও  প্রতি দিন , প্রতি ক্ষণ। তোমার চারপাশে, বাতাসের অনুপরমাণুতে ভাসছে স্নেহের বেড়ি তোমার ভালোর বাসনারা, সবসময় ব্যস্ত প্রহরী হয়ে দাড়িয়ে আছে ঘরে দুয়ারে তুমি ক্লান্ত বোধ করো, মুক্তি চাও এই বেড়ি থেকে। সীমাহীন সীমানার হাতছানি নিঃশব্দ থাকে, স্নেহের অদৃশ্য বেড়ি ভাঙার ইচ্ছায় তুমি ডানা ঝাপটাও প্রতি দিন , প্রতি ক্ষণ। তুমি ভুলে যাও, পরকে আপন করতে পারার চেষ্টা  নিশ্চয়ই শিক্ষা, কিন্তু আপনের আগল ভাঙার বিনিময়ে হলে তা অসম্পূর্ণ, প্রতি দিন , প্রতি ক্ষণ।

পাল্টে গেলেই

পাল্টে গেলেই জীবন বাড়ে, না পাল্টালে নয়, জীবন মনে এগিয়ে যাওয়া, নইলে মৃত্যু হয়।