সেদিন সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। আকাশের তারা খসার মত আমার আত্মা খসে খসে পড়ছিল রুক্ষ আর শুষ্ক রহমতের বুকে সারা দেশের ড্রইং রুম কেঁপে উঠেছিল বর্বরতার যন্ত্রনায় চোদ্দ থেকে চল্লিশ ইঞ্চির বোকা বাক্সে চোখ রেখে আমার মত সারাদেশ শোকে মাতন করেছে শ্বাস-কাটা মুরগির মত। আমিও দেখেছি সেই কালো সময়ের দুর্গন্ধ মাখা জীবন্ত লাশের অসহায় পিলখানার গোঙানি, অনুভব করেছি হৃদকম্প কিন্তু আজ স্নায়ুতে কম্পন নেই,বিবেকের পিতা শুড়িখানায় শুয়ে আছে নিশ্চিন্তে। দরং এর দরজায় কেঁপে কেঁপে উঠছে ছোট ছোট জোনাকির মত রহমতের মিনিরা চোখ বুঁজে আমার আত্মা নাচছে, তান্ডব করছে বরাকের বাঁকে রহমতের বুকে। তবু ড্রইং রুম শ্মশানের নিস্তব্ধতায় ঝিমোচ্ছে... কেন? ভেবে দেখলাম আমার বিবেক বন্ধক পড়ে গেছে কর্পোরেটের আঁধার কুলুঙ্গিতে,যেখানে আলোর প্রবেশ নিষেধ।
শিকারি নয়, পাখিরাই বুঝি সন্ত্রাসী হয় ! আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : ডানা মেলতে চেয়েছি, খোলা আকাশকে ভালোবেসে তোমাকে বন্দী করিনি সেদিন, এই অধিকারের অছিলায় তবু, আজ আমি এক উন্মুক্ত কারাগারে বন্দীবাসী আর, সে কারাগারের রাজরক্ষী, আজ আমি নই, তুমি! তুমি শ্বাস নেবে ভেবে, আলগা করেছিলাম বুকের পাঁজর পরিযায়ী জেনে, তোমাকে জায়গা দিয়েছিলাম যে পানসিতে তাকিয়ে দ্যাখো, সে এখন বারুদ বাতাসে ডুবন্ত প্রায়। আর সেই ছোট্ট পানসির নিয়ন্ত্রক, আজ আমি নই, তুমি! আজীবন বাঁচবো ভেবেছি জলপাইয়ের ছায়াকাশে কাটাছেঁড়া নয়, কবিতার ভাঁজে তোমাকে পাবো বলে নিভৃতে সেই আমি, আজ কামানের শব্দে পাখা ঝাঁপটাই... ঘুমাইও। যদিও সে শব্দ-মালিক, বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! চোখের জলকে আগলে রেখেছি, আট দশক হয়ে গেল বিরহের বেদনা ভাগ করে নিতে, গোপনে তোমারই অনুসঙ্গে। আজ সে শুকিয়ে গেছে, চাতকের কন্ঠের মতো। এ পিপাসার সৃষ্টিকর্তা কে! বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! কী দোষ...