প্রসব যন্ত্রণা মনে, জল ভরা চোখে তাহেরার জাল পড়েছে যেন, ছোট মেয়ের জন্মের সময় অনেক কষ্ট পেয়েছিল সে, সে কষ্টের বহর মনে হলে শিটিয়ে ওঠে অনাহারি মুখ, আর চোখ দুটো। নাড়ী-ছেড়া বেদনায় ককিয়ে সেদিন বলেছিল : ‘শত্রুটা আমায় মেরে ফ্যালবে’ সেদিন সে মরেনি, হারিয়েছিল; হারিয়েছিল, চীরতরে ‘ছেলের মা’ হওয়ার স্বপ্ন পতির বংশ রক্ষার ক্ষমতা। তাই সে আজ উচ্ছিষ্টের দলে প্রথমা। ‘উত্তর ২৪ পরগনা বার্তা’ শারদীয়া সংখ্যা – ১৪০৪ ইংরাজি – ০৮/১০/১৯৯৭
শিকারি নয়, পাখিরাই বুঝি সন্ত্রাসী হয় ! আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : ডানা মেলতে চেয়েছি, খোলা আকাশকে ভালোবেসে তোমাকে বন্দী করিনি সেদিন, এই অধিকারের অছিলায় তবু, আজ আমি এক উন্মুক্ত কারাগারে বন্দীবাসী আর, সে কারাগারের রাজরক্ষী, আজ আমি নই, তুমি! তুমি শ্বাস নেবে ভেবে, আলগা করেছিলাম বুকের পাঁজর পরিযায়ী জেনে, তোমাকে জায়গা দিয়েছিলাম যে পানসিতে তাকিয়ে দ্যাখো, সে এখন বারুদ বাতাসে ডুবন্ত প্রায়। আর সেই ছোট্ট পানসির নিয়ন্ত্রক, আজ আমি নই, তুমি! আজীবন বাঁচবো ভেবেছি জলপাইয়ের ছায়াকাশে কাটাছেঁড়া নয়, কবিতার ভাঁজে তোমাকে পাবো বলে নিভৃতে সেই আমি, আজ কামানের শব্দে পাখা ঝাঁপটাই... ঘুমাইও। যদিও সে শব্দ-মালিক, বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! চোখের জলকে আগলে রেখেছি, আট দশক হয়ে গেল বিরহের বেদনা ভাগ করে নিতে, গোপনে তোমারই অনুসঙ্গে। আজ সে শুকিয়ে গেছে, চাতকের কন্ঠের মতো। এ পিপাসার সৃষ্টিকর্তা কে! বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! কী দোষ ছিল পাখিটার! কেন নিজভূমে হল পরবাসী? সে তো মধ্য-সাগরের স্রোতকে কব্জা করেনি, চায়ওনি কখনো ভেঙে দেয়নি কারও স্বপ্ন, ডিঙা ভাসানোর অধিকার।