আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : পিঁপড়ের লাশ ও জ্যামিতির খাতা সারি সারি পিঁপড়ের লাশ অথবা মুমূর্ষু দেহ পড়ে আছে উত্তাপের স্তূপে তুমি দেখতে পাও না পিছনটা হাতির মত বিশাল তোমার দেহ, মাহুতের চোখই তোমার চোখ, তোমার পথ আর গন্তব্যও প্রভুর নির্দেশ এলে শুড় দিয়ে ছুড়ে দাও তুমি মাথার ওপারের শুষ্ক মরুভূমির বুকে একপশলা বৈশাখী বৃষ্টি, নাম দাও শরতের শিশির তাতে পিঁপড়েরা ভেজে না, পোড়েও না কেবলই আধপোড়া হয় শীর্ন দেহ তোমার চোখে চুখোশ আটা, তাই কিছুই দেখো না জেগে থাকো নিরোর স্বপ্ন নিয়ে ঘেন্নার পিল খাওয়াও আর আকন্ঠ গেলাও উন্নয়নের সিরাপ সর্বরোগ-হারী বিশল্যাকরনীর ভরসায় ডেকে আনো চেতনার অকাল মৃত্যু এভাবে এগোবে তুমি, এগোবে তোমার রথ এটাই সরল অংক তোমার জ্যামিতির খাতায়? ভুলে যেওনা এই পিঁপড়েরাই বয়ে বেড়ায় তোমার ওজন, তোমার নিশ্বাস তোমার ইহকাল, হয়তো বা পরকালও ভুলে যেও না এরা জাগলেই ছিঁড়ে যাবে তুমি ও তোমার সরল অংকের জ্যামিতির খাতা তোমার উপেক্ষার শ্মশান যাত্রায় এরা অংশ নেবে না, নেবে না মুখাগ্নির দায়।
শিকারি নয়, পাখিরাই বুঝি সন্ত্রাসী হয় ! আলী হোসেনের রাজনৈতিক কবিতা : ডানা মেলতে চেয়েছি, খোলা আকাশকে ভালোবেসে তোমাকে বন্দী করিনি সেদিন, এই অধিকারের অছিলায় তবু, আজ আমি এক উন্মুক্ত কারাগারে বন্দীবাসী আর, সে কারাগারের রাজরক্ষী, আজ আমি নই, তুমি! তুমি শ্বাস নেবে ভেবে, আলগা করেছিলাম বুকের পাঁজর পরিযায়ী জেনে, তোমাকে জায়গা দিয়েছিলাম যে পানসিতে তাকিয়ে দ্যাখো, সে এখন বারুদ বাতাসে ডুবন্ত প্রায়। আর সেই ছোট্ট পানসির নিয়ন্ত্রক, আজ আমি নই, তুমি! আজীবন বাঁচবো ভেবেছি জলপাইয়ের ছায়াকাশে কাটাছেঁড়া নয়, কবিতার ভাঁজে তোমাকে পাবো বলে নিভৃতে সেই আমি, আজ কামানের শব্দে পাখা ঝাঁপটাই... ঘুমাইও। যদিও সে শব্দ-মালিক, বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! চোখের জলকে আগলে রেখেছি, আট দশক হয়ে গেল বিরহের বেদনা ভাগ করে নিতে, গোপনে তোমারই অনুসঙ্গে। আজ সে শুকিয়ে গেছে, চাতকের কন্ঠের মতো। এ পিপাসার সৃষ্টিকর্তা কে! বিশ্ব জানে আমি নই, তুমিই! কী দোষ ছিল পাখিটার! কেন নিজভূমে হল পরবাসী? সে তো মধ্য-সাগরের স্রোতকে কব্জা করেনি, চায়ওনি কখনো ভেঙে দেয়নি কারও স্বপ্ন, ডিঙা ভাসানোর অধিকার।